নির্বাচন

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা

সাপ্তাহিক আড়াইহাজার: সরকারের মেয়াদপূর্তির অব্যবহিত আগে যথাসময়ে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল গত বুধবার সন্ধ্যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন। তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ। নির্বাচনের তফসিলকে আওয়ামী লীগ স্বাগত জানিয়েছে, অন্যদিকে বিএনপি প্রত্যাখ্যান করেছে। গণমাধ্যমে প্রদত্ত ভাষণে সিইসি বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর। ৩০০ আসনেই কাগজের ব্যালটে ভোটগ্রহণ করা হবে। নির্বাচন সামনে রেখে সব ধরনের সংঘাত ও সহিংসতা পরিহার করে সমাধান খুঁজতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান সিইসি।

সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদের বিধান মতে, ৩০০ সাধারণ আসন এবং ৫০টি সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত নারী সদস্যদের নিয়ে জাতীয় সংসদ গঠিত হয়। সংবিধানের ১২৩ (৩) (ক) অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদপূর্তির পূর্ববর্তী ৯০ দিবসের মধ্যে সংসদের সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা সংবলিত এই নির্দেশনা নির্বাচন কমিশন সরকারের নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসমূহের সহায়তা নিয়ে সম্পন্ন করে থাকে। ভাষণে সিইসি আরও বলেন, সরকার আসন্ন সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক এবং শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।

কমিশনও তার আয়ত্তে থাকা সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে এবং সরকার থেকে আবশ্যক সব সহায়তা গ্রহণ করে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার বিষয়ে সততা, নিষ্ঠা এবং আন্তরিকতার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করবে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে দেশজুড়ে ১২টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইলে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি কমিউটার ট্রেনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে ট্রেনের তিনটি বগি পুড়ে যায়। 
সংঘাতমুখর বাস্তব পরিস্থিতি সমর্থনযোগ্য নয়। তফসিল ঘোষণার আগেই বিএনপি হরতাল দিয়েছে, পাঁচ দফা অবরোধ ঘোষণা করেছে।

আরও পড়ুন >   আড়াইহাজারে ১১ বছরের শিশুকে মুখ বেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ, আটক-১

এখন তফসিল ঘোষণার পর নাশকতা ও চোরাগোপ্তা হামলা বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষক মহল। দেশে নির্বাচন একটি উৎসবমুখর ঘটনাই হয়ে এসেছে এতকাল যাবত। এখন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর যদি উৎসবমুখর পরিবেশের বদলে জনমনে শঙ্কা ও ভয়ভীতি কাজ করে, তবে সেটি হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। নির্বাচন নিয়ে বিদেশী কূটনীতিকরা তৎপর হলেও কেউই কোনো বিশেষ দলকে পক্ষপাতিত্বের কথা বলেনি। নিরপেক্ষ অবস্থানই বজায় রাখার কথা বলেছেন। সেটিই প্রত্যাশিত। 

বাংলাদেশের মানুষ বারবার ভোটের মধ্য দিয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করেছেন। নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচন বর্জন করে ক্ষমতায় যাওয়ার কোনো বিকল্প বৈধ পথ নেই। দেশের মানুষ এখনো আশাবাদী, বিএনপি অগ্নিসন্ত্রাসের পথ পরিহার করে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে। তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক, এটাই কাম্য। যথাসময়ে একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে আগামীর সরকার গঠিত হোক- এটি সময়ের দাবি।

আরও দেখুন

সম্পৃক্ত

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button