নিজস্ব প্রতিনিধিঃ উচ্চমূল্যের বাজারে বাধ্য হয়ে বাড়তি দামে বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য ক্রয় করে দিশেহারা নিম্ন আয়ের মানুষ। এই উচ্চমূল্যের বাজারে বেড়েছে বিভিন্ন পরিমান বোতলজাত পানির দাম। তাই নারায়ণগঞ্জের দোকানগুলোতে বাড়তি দামে বাধ্য হয়ে পানি কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
কয়েক মাস আগে যে পানি পাওয়া যেত ২০ টাকায়, এখন একই পরিমান পানি কিনতে হচ্ছে ২৫ টাকায়। আধা লিটার পানির আগের দাম ছিল ১৫ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ২০ টাকা। অর্ধাৎ এক লিটারের দামে কিনতে হচ্ছে আধা লিটার বোতলজাত পানি। গত বছরের অক্টোবর মাসে বড় বোতলের পানির দাম বাড়িয়েছিল বিভিন্ন কোম্পানি।
বাড়ানোর পর এক লিটার পানির দাম ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা। দের লিটার পানির দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকা। দুই লিটার পানির বোতলের দাম ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা এবং পাঁচ লিটার পানির বোতলের দাম ৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়েছিল। এবার ৫০০ মিলি. পানির দাম ১৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২০ টাকায়। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারন বোতলজাত পানির ক্রেতারা।
বাজারে বোতলজাত পানির মধ্যে সর্বাধিক চাহিদা ৫০০ মিলিলিটারের। ক্রেতারা বলছে, আধালিটার পানিতে পাঁচ টাকা বাড়ানো অযৌক্তিক। পানি তো আমদানি করা হয় না। দেশে বছরে অন্তত ৩৫ থেকে ৪০ কোটি লিটার বোতলজাত পানি বিক্রি হয়, যার বাজারমূল্য প্রায় এক হাজার কোটি টাকা।
নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খুচরা দোকান ঘুরে দেখা গেছে, ছোট বড় সব বোতলজাত পানির দাম পাঁচ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে। বেশির ভাগ কোম্পানির ৫০০ মি. লিটার বোতলজাত পানির দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। তবে কয়েকটি দোকানে আবার আগের দামের ৫০০ মি. লিটার বোতল দেখা যায়। তাদের কেউ ১৫ টাকায় বিক্রি করলেও বেশির ভাগই ২০ টাকায় বিক্রি করছেন।
এক দোকানদার বলেন, আমার দোকানে এখনন পর্যন্ত নতুন দামের ৫০০ মি. লিটারের পানির বোতল আসেনি। তাই আগের দামে ১৫ টাকায় বিক্রি করছি। তবে আমার দোকানে কোম্পানির লোক এসে জানিয়েছে যে, নতুন ৫০০ মি. লিটার বোতলের দাম ১৫ টাকার যায়গায় ২০ টাকা করেছে কোম্পানি।
তার পাশের আরেক দোকানদান বলেন, কোম্পানির লোক দোকানে নতুন দামের পানির বোতলের অর্ডার দিতে এসেছিল কিন্তু আমি অর্ডার করি নাই। তাছাড়া এখনো পুরোপুরি গরম পরে নাই। তাই নতুন দামের পানির বোতল দোকানে তোলা হয় নাই। বাড়তি দামে ক্রেতাদের আগ্রহ থাকলে নতুন দামের পানির বোতল তিনি দোকানে তুলবেন বলে জানিয়েছেন।
দেশে দুই শ’র বেশি কম্পানিকে খাবার পানি বাজারজাত করার অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। এর মধ্যে অন্তত ৪৫টি কম্পানি দেশজুড়ে বোতলজাত পানি সরবরাহ করছে। এসব কম্পানির ৩৫টি রাজধানীকেন্দ্রিক। এই কম্পানিগুলো সাধারণত আধালিটার, এক লিটার, দুই লিটার ও পাঁচ লিটারের বোতল বাজারজাত করে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, ১৫ থেকে ২০ দিন ধরে বাড়ানো হয়েছে পানির দাম। খুচরা বাজারে দেখা গেছে, অ্যাকুয়াফিনা ৫০০ মিলিলিটার পানির বোতল বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, আগে যা ছিল ১৫ টাকা। আগে এক লিটারের দাম ছিল ২৫ টাকা, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, দেড় লিটারের দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৫ টাকা করা হয়েছে।
উৎপাদকরা বলছেন, ‘গ্যাস, বিদ্যুৎ ও প্লাস্টিকের দাম বেড়েছে। সরকার ট্যাক্স বাড়িয়েছে, ডলারের দামসহ সব কিছুর দাম বেড়েছে। এ জন্য পানির দামও বাড়ানো হয়েছে।’
বিদ্যুত বিল, উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সেই সাথে কাঁচা মালের দামও বেড়েছে। তাই কোম্পানির সিদ্ধান্ত মতে বোতল প্রতি দাম বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া অন্নান্য উৎপাদন ও বাজারজাতকারী কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবং বিভিন্ন কাঁচামালের আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় বোতলজাত পানির দাম আগের থেকে বাড়ানো হয়েছে।