নিজস্ব প্রতিনিধি: করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই আরেকটি ঈদ উদযাপন করতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা।
ঈদ মানেই আনন্দ, নতুন জামা আর আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের মিলনমেলা। হৈ-হুল্লো, ঘুরে বেড়ানো, খাওয়া-দাওয়া আর আড্ডায় মেতে ওঠা। এ উৎসবে মুসলমানরা ঈদগাহে কোলাকুলি করে থাকেন। এছাড়া সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বন্ধনে সবাইকে নতুন করে আবদ্ধ করাও ঈদের অন্যতম অর্থ। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে এবারের ঈদ আনন্দের সবকিছুতেই ভাটা পড়েছে।
বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া করোনার প্রকোপ থেকে বেরিয়ে অনেক উন্নত দেশ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করলেও এখনো বিপদে দরিদ্র দেশগুলো। এর মধ্যেই উৎসবে লাগাম টেনে আনন্দের উপলক্ষগুলো উদযাপন করছেন বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ।
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ বাংলাদেশেও এসেছে ভিন্ন আবহে। ঈদ আনন্দ যেন করোনা সংক্রমণের উপলক্ষ না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে দেশের মানুষকে। সংক্রমণ এড়াতে দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ঘনিষ্ঠজনদের থেকেও।
৩০ দিন সিয়াম সাধনার পর শুক্রবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন দেশের মুসলমানরা। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
বাসস জানিয়েছে, করোনার বিস্তার রোধে সরকারের নির্দেশনায় এবার খোলা মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। ঈদ জামাত হবে মসজিদের ভেতরে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে।
এবার হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত হচ্ছে না। হচ্ছে না শত বছরের ঐতিহ্য ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানের ঈদ জামাতও। তবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদের ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশঙ্কার মধ্যেই আসছে এবারের ঈদ। মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ঈদকে ঘিরে যে আনন্দ-উচ্ছাস থাকার কথা তা এবারো গত বছরের ন্যায় ম্লান করে দিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস।
করোনা মোকাবেলায় ও সংক্রমণ বিস্তার রোধে সরকারের নির্দেশনায় এবার খোলা মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। ঈদ জামাত হবে মসজিদের ভেতরে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে মসজিদের ইমাম-খতিব, মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটি, ধর্মপ্রাণ মুসল্লী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
এবার খোলা স্থানের পরিবর্তে কাছের মসজিদে অনুষ্ঠেয় ঈদ জামাতে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে নির্দেশনায় বলা হয়েছে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের বাসায় যাতায়াত না করার পাশাপাশি বিনোদন কেন্দ্রে ঘোরাঘুরি না করে নিজ ঘরে ঈদ উদযাপন করতেও বলা হয়েছে।
ঈদুল ফিতরের তারিখ নির্ধারণে বুধবার সন্ধ্যায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা হয়। সভার পর ধর্ম প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশের কোথাও পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে শুক্রবার উদযাপিত হবে ঈদুল ফিতর। তিনি দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনের আহ্বান জানান।