ইবনে সিনা সাকিব: নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার শহীদ কাজী মােঃ মঞ্জুর হােসেনের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের ৫০তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ৭ নভেম্বর। কাজী মােঃ মঞ্জুর হােসেন ১৯৭১ সালের ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার উপজেলার বগাদি নামক গ্রামে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে এক সম্মুখ সমরে ০৫ জন খান সেনাকে খতম করে অবশেষে হঠাৎ খান সেনাদের এক বুলেটের আঘাতে তিনি বীরের ন্যায় শাহাদাৎ বরণ করেন। আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ণের ইদবারদী গ্রামের কাজী বাড়ী পারিবারিক কবর স্থানে শহীদ মঞ্জুর কে দাফন করা হয়। যুদ্ধ চলাকালীন তিনি ২নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার খালেদ মােশারফ এর অধীনে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় বর্ষের (ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন) ছাত্র থাকাকালীন ভারতের আসামে গেরিলা ট্রেনিং নিয়ে নিজ মাতৃভূমি রক্ষায় মঞ্জুর তার হেড কোয়ার্টার মেলাঘর হয়ে আড়াই হাজার থানায় চলে আসেন এবং গ্রুপ ক্যাপ্টেন হিসেবে এই স্থানে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। কাজী মােঃ মঞ্জুর হােসেন ১৯৬৯ সালে সৈয়দপুর হাই স্কুল, রংপুর থেকে এসএসসি পাশ করেন।
তিনি ১৯৬৭ সালে East Pakistan Civil Defense Organization, Rangpur থেকে কৃতিত্বের সাথে জুনিয়র লিডারশীপ ট্রেনিং সম্পন্ন করেন। তিনি শহীদ হোসেন সোহবাওয়ার্দী হলের ছাত্র ছিলেন, তিনি Scouting ও করতেন। তার গেম টিচার স্বাক্ষরিত সনদে দেখা যায় তিনি একাধারে হকি এবং ফুটবল দলের অধিনায়ক ছিলেন। তার পিতা কাজী সােলায়মান বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকুরি করতেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালে আড়াই হাজার থানায় এক জনসভায় ভাষণ দিতে এসে শহীদ কাজী মঞ্জুর হােসেনের এই আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য আড়াই হাজার স্টেডিয়ামের নামকরণ শহীদ মঞ্জুর স্টেডিয়াম করেন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি, হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দী হল ও শহীদ মিনারে নাম ফলক রয়েছে।
তার জন্ম ১৯ মে, ১৯৫৩। শহীদ মঞ্জুরের পরিবারের পক্ষ থেকে তার আত্মার মাগফেরাত কামনার্থে আজ নিজ বাড়ি আড়াই হাজার উপজেলার ইদবারদি গ্রামে বাদ আসর কুরআনখানি, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়ােজন করা হয়েছে। উক্ত দোয়া অনুষ্ঠানে আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সকলকেই উপস্থিত হয়ে শহীদের আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনার জন্য বিনীত অনুরােধ করা হয়েছে।