স্টাফ রির্পোটার: আসন্ন শীতে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যেন আবার না বাড়ে, সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময়ে পুরোপুরিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও মাস্ক পরার আহ্বান জানিয়ে তিনি রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত ভিটামিন-সি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত কম্বল গ্রহণ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ৩৭টি বেসরকারি ব্যাংকের কাছ থেকে এ কম্বল গ্রহণ করেন। মুখ্য সচিব প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলের জন্য ১০ লাখ টাকার চেকও গ্রহণ করেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেখা যাচ্ছে, যখনই আবার শীতকাল আসছে, পৃথিবীর সবদেশেই কিন্তু আবার করোনাভাইরাস দেখা দিচ্ছে। ইউএসএ, ইংল্যান্ড বা ইউরোপের দেশগুলোতে এর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাজেই বাংলাদেশের সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য আমি অনুরোধ করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শীতকাল এলেই একটু ঠান্ডা লাগে, সর্দি, কাশি হয়। আর এটা হলেই করোনাভাইরাস আমাদের সাইনাসে গিয়ে বাসা বানাতে পারে। কাজেই, সেদিকে সবাইকে একটু সতর্ক থাকতে হবে। সবাইকে মাস্ক পরতে হবে এবং খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি যাতে একটু বেশি থাকে এবং যাতে ঠান্ডা না লাগে সেদিকে নজর দিতে হবে।
এ সময় তিনি মৌসুমি ফল-মূল, শাক-সবজি এবং তরিতরকারি বেশি করে খাওয়ার পরামর্শ দেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, টিকা দেওয়ার পরে কারও করোনা হলে তার হয়তো ক্ষতির পরিমাণটা বেশি হবে না। তবে তার থেকে ছড়াতে পারে, তাই মাস্কটা ব্যবহার করতেই হবে।
তিনি এ ব্যাপারে প্রচার-প্রচারণার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, সবাইকে সতর্ক করার বিষয়ে প্রচার-প্রচারণাটা দরকার। একটু সতর্ক হলে এই করোনাভাইরাস আর বাংলাদেশের মানুষের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।
আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে টিকার আওতায় আসবে সবাই
আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে সবাইকে টিকা দেওয়ার প্রস্তুতির কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে টিকাদান কর্মসূচি যেটা চলছে আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে আমরা সকল মানুষকে টিকা দিতে সক্ষম হবো। বাংলাদেশের কোন কোন মানুষ যেন বাদ না যায়, সকল নীতিমালা অনুযায়ী টিকা গ্রহণ করার মতো যোগ্য প্রত্যেকটা মানুষ টিকা পাবে সে ব্যবস্থাটা আমরা করেছি।
স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরও টিকা দেওয়া হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, টিকাদান কর্মসূচি চলছে সারা বাংলাদেশে। পাশাপাশি আমাদের শিক্ষার্থীদের আমরা টিকা দিচ্ছি এবং স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদেরও আমরা টিকা দেব। সে প্রস্তুতি আমরা ইতিমধ্যে নিয়েছি। দুই একদিনের মধ্যেই আমরা কাজ শুরু করবো।
সরকার করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে সবকিছুতেই একটা স্থবিরতা সারা বিশ্বব্যাপী সৃষ্টি হয়েছিল। তবে বাংলাদেশে আমরা সব সময় চেষ্টা করেছি যে বাংলাদেশে যেন কোন মতে কোন কিছু স্থবির না হয়, অন্তত সচল থাকে। সেদিক থেকে আমরা মনে করি বাংলাদেশ যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে।
ব্যাংক কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সমগ্র দেশের জনগণের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসকে আমরা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। টিকা সংগ্রহ করে সারা দেশে টিকদান অব্যাহত রয়েছে এবং আজকেও সারা দেশে ৮০ লাখ টিকাদানের কার্যক্রম চলছে। ছাত্রসমাজ এবং স্কুলের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি তার সরকারের রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাকালে বিশ্বব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে আসলেও তার সরকার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশে কোনোকিছু যাতে স্থবির না হয় এবং সচল থাকে। সেদিক থেকে আমি মনে করি, বাংলাদেশ যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে।
মানুষের দুঃসময়ে সবসময় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ব্যাংক এগিয়ে আসে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে এবারও শীতার্ত জনগণের সহায়তায় এগিয়ে আসায় ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোটাই বড় কথা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরকে স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। কাজেই এই দেশ উন্নত সমৃদ্ধ হোক, দারিদ্র মুক্ত হোক এবং তৃণমূলের মানুষটির পর্যন্ত যাতে ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।