শিক্ষা

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা | প্রক্রিয়া | বেতন

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা, প্রক্রিয়া এবং বেতন স্কের নিয়ে যেনো অনেকেরই স্বপ্নের শেষ নেই। পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে দিনশেষে ভালোমানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করবার এক বুক আশা নিয়ে আজো অনেকেই দিন গুণছে। 

তেমনই আশার প্রদীপ বুকে নিয়ে চলা স্বপ্নবাজদের জন্য আমাদের আজকের এই লেখাটি। যেখানে থাকবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ যোগ্যতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন স্কেল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। সুতরাং সাথেই থাকুন। 

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ যোগ্যতা

শুরুতেই আমরা আলোচনা করবো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ যোগ্যতা সম্পর্কে। জানবো কি কি যোগ্যতা না থাকলে আপনি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে কখনোই আবেদনই করতে পারবেন না। 

শুরুতেই বলে রাখি বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি কতৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট যোগ্যতা নির্ধারণ করে দিয়েছে। যা মেনেই আপনাকে আবেদন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ যোগ্যতার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলি হলো: 

১. বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ টি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ অর্থ্যাৎ  বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও আইন অনুষদের শিক্ষক হিসাবে আবেদনের জন্যে আলাদা আলাদা যোগ্যতা রেখে তবেই আবেদন করতে হবে। 

২. আবেদনকারীর একাডেমিক যোগ্যতা হিসাবে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উভয় পরীক্ষায় সিজিপিএ-৪ এর মধ্যে ন্যূনতম ৩ দশমিক ৫০ পয়েন্ট না থাকলে আবেদন করা যাবে না। 

৩. বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা হিসাবে আবেদনকারীকে অবশ্যই মানবিক সেক্টরে ৩ দশমিক ৫০ এবং অন্যদিকে ন্যূনতম ৩ দশমিক ২৫ পয়েন্ট থাকতেই হবে। 

৪. আবেদনকারীর যদি এমফিল বা পিএইচডি ডিগ্রিও থাকে তবুও স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উভয় পরীক্ষায় নির্ধারিত সিজিপিএর বিষয়টিতে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। 

আরও পড়ুন >   এইচএসসির প্রস্তুতিতে ভাটা অনিশ্চয়তায় ১২ লাখ শিক্ষার্থী

৫. কমপক্ষে চার বছরের স্নাতক ডিগ্রি না থাকলে কোনো ব্যাক্তিই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না। 

৬. স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি না থাকলে কোনো আবেদনকারীই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদভুক্ত বিভাগে আবেদন করতে পারবে না। 

৭. যারা কৃষি ও কৃষিপ্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে চান তাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ যোগ্যতার মাপকাঠি অনুযায়ী পাঁচ বছর মেয়াদি ডিভিএম বা সমমান পরীক্ষায় টপ টেনের একজন হতে হবে। 

৮. আবেদনকারীর যদি ন্যূনতম তিন বছরের সক্রিয় শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে সে কোনোভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক পদে আবেদন করতে পারবে না। 

৯. যাদের এমফিল ডিগ্রি আছে তাদের ক্ষেত্রে প্রভাষক পদে দুই বছর অভিজ্ঞতা থাকলেই হবে। 

১০. সবশেষে যাদের পিএইচডি ডিগ্রি আছে তাদের ক্ষেত্রে এক বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকলেই আবেদন করা যাবে যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক পদে। 

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ যোগ্যতার সাথে যদি আপনার মাঝে থাকা একাডেমিক রেজাল্টসহ অন্যান্য দিক মিলে যায় তবেই আপনি আবেদনের জন্যে যোগ্য হিসাবে বিবেচিত হবেন। এক্ষেত্রে এর পরের ধাপ হিসাবে আপনাকে জানতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ঠিক এমনটা: 

নোটিশ: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ হলো নোটিশ! শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ জাতীয় সংবাদপত্রে এবং তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নিয়োগের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করবে। প্রয়োজনীয় যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং আবেদনের সময়সীমার বিবরণ দিয়ে সাজানো হবে এসব নোটিশ। 

আবেদন জমা: এরপর প্রার্থীকে আবেদন জমা দিতে হবে। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস, একাডেমিক সার্টিফিকেট, ট্রান্সক্রিপ্ট, গবেষণার প্রকাশনা এবং অভিজ্ঞতার প্রশংসাপত্রসহ সঠিক নিয়মে আবেদন জমা দিতে হবে।

আরও পড়ুন >   এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত

শর্ট লিষ্টিং: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার এই অংশে বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই কমিটি আবেদনকারীদের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং গবেষণায় অবদানের উপর ভিত্তি করে একটি শর্ট লিষ্ট তৈরি করবে। 

পরীক্ষা এবং নির্বাচন: যারা শর্টি লিষ্টিংয়ে টিকে যাবে তাদের একটি লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে। অথবা দিতে হবে একটি ইন্টারভিউ। আর এই ইন্টারভিউ প্যানেলে সাধারণত থাকবে সিনিয়র ফ্যাকাল্টি মেম্বার এবং ইউনিভার্সিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর। 

নিয়োগ: নিয়োগ হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার একেবারে শেষ ধাপ। এই ধাপে নির্বাচিত প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগ দেওয়া হবে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ যোগ্যতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে তো জানলেন। এবার আসি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতনের ব্যাপারে। মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন হিসাবে যে বেতন স্কেলটি নির্ধারিত হয়ে থাকে সেটি হলো: 

  • প্রভাষক ২৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা
  • সহকারী অধ্যাপক ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকা
  • সহযোগী অধ্যাপক ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা
  • অধ্যাপক ৮০ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা

বলে রাখা ভালো মূল বেতন ছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিভিন্ন ভাতা এবং সুবিধাও পেয়ে থাকে।

আরও দেখুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker