সারাদেশে

করোনার জাল সার্টিফিকেট তৈরি করে আড়াইহাজারের যুবক গ্রেফতার

স্টাফ রির্পোটার: নারায়ণগঞ্জে আড়াইহাজারে কোভিড-১৯ টেষ্টের জাল অনুমতি পত্র তৈরী করে দেশব্যাপি কোভিড-১৯ টেষ্টের জন্য লোক নিয়োগের নামে প্রতারণার অভিযোগে এক প্রতারক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তার নাম মো: মোস্তাকিম আহমেদ। বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) বিকালে উপজেলার বিশনন্দী পূর্বপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব-১১ এর মেজর নাজমুছ সাকিব শুক্রবার (২৩ জুলাই) বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠি জালিয়াতি করে তৈরি করা হয়েছে কোভিড-১৯ এন্টিজেন পরীক্ষার ভূয়া অনুমোদনপত্র। পরীক্ষা ছাড়াই বিদেশগামী কোভিড পজেটিভ যাত্রীদের দেয়া হতো নেগেটিভ সার্টিফিকেট। এসব কাজের জন্য টাকার বিনিময়ে সারাদেশে দেয়া হচ্ছিল কর্মী নিয়োগ। সবই চলছিল ‘টিকেএস হেলথ কেয়ার লিমিটেড’ নামের একটি অস্বিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে।

প্রতারণার শিকার কয়েকজন বিদেশগামী যাত্রীর ভূয়া কোভিড সার্টিফিকেট বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে টিকেএস হেলথ কেয়ারের সন্ধান পায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থেকে কথিত প্রতিষ্ঠানটির একজন সহকারি ব্যবস্থাপককে আটক করে র‌্যাব-১১ এর সদস্যরা। আটক ওই ব্যাক্তির নাম মো. মোস্তাকিম (২৬)। তিনি উপজেলার বিশনন্দী পূর্বপাড়া এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে।

এঘটনায় শুক্রবার সকালে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক আশরাফুল আমিন বাদী হয়ে মোস্তাকিমসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় তিন জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও ৩৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, টিকেএস হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান আবুল হাসান (৩৮) ও মহাব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩১)। আবুল হাসান ঝালকাঠির রাজপুর উপজেলার ডহর শংকর এলাকার মো. খলিলুর রহমানের ছেলে। যশোর চৌগাছা থানার সলুয়া এলাকার খোরশেদ আলমের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন।

আরও পড়ুন >   আড়াইহাজার সাবরেজিস্ট্রি অফিসে রাজস্ব আদায় ৫৫ কোটি 

মামলায় ভূয়া অনুমতিপত্র বানানো, অবৈধভাবে পরীক্ষা কার্যক্রম চালানো, কর্মী নিয়োগের নামে লোকজনের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ ও পরীক্ষা না করেই বিদেশগামী কোভিড-১৯ পজেটিভ যাত্রীদের নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেয়াসহ বেশ কিছু অভিযোগ করা হয়েছে।

মামলার এজাহার ও আড়াইহাজার থানা পুলিশ সুত্রে জানা গেছে,টিকেএস হেলথ কেয়ারের নামে একটি চক্র রাজধানী ঢাকা থেকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সারাদেশে কর্মী নিয়োগ দিচ্ছিল। তারা চাকরী দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত। বেশ কিছুদিন যাবৎ তারা পরীক্ষা না করেই বিদেশগামী কোভিড পজেটিভ যাত্রীদের টাকার বিনিময়ে ভূয়া নেগেটিভ সার্টিফিকেট দিচ্ছিল। বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নজরে আসলে তাদের একটি দল অনুসন্ধান করে আড়াইহাজার এলাকার বেশ কিছু বিদেশগামী যাত্রীর ভূয়া কোভিড সার্টিফিকেট সনাক্ত করেন। সেসব সার্টিফিকেটের সূত্র ধরেই মোস্তাকিমের সন্ধান পাওয়া যায়। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষে আশরাফুল আমিন র‌্যাব-১১ বরাবর অভিযোগ করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আড়াইহাজার থানার উপ পরিদর্শক তারেক পারভেজ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে মোস্তাকিম নিজেও একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৩৫ হাজার টাকা বেতনে ওই চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়। তারা সারাদেশেই তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তারের চেষ্টা করছিল। মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জের করোনা ফোকাল পার্সন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, নারায়ণগঞ্জে টিকেএস’র তেমন কোন কার্যক্রম নেই। প্রতারণার শিকার বিদেশগামী যাত্রীদের মধ্যে কয়েকজন আড়াইহাজারের বাসিন্দা। এমন প্রতারণার বিষয়ে বিদেশগামী যাত্রীদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারি বেসরকারি কোন সংস্থার পক্ষেই কোভিড সার্টিফিকেট পাল্টানোর সুযোগ নেই। প্রতিটি কোভিড সার্টিফিকেট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সার্ভারে সংরক্ষিত থাকে। বিমান বন্দরে যাত্রীদের সেসব তথ্য যাচাই করা হয়।

আরও দেখুন

সম্পৃক্ত

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker