শিক্ষা

এইচএসসির প্রস্তুতিতে ভাটা অনিশ্চয়তায় ১২ লাখ শিক্ষার্থী

দীর্ঘ তিন মাস ধরে অপেক্ষায় রয়েছেন এইসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় গত এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা এখনো অনিশ্চিত। কবে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে- সেটিও এখনো পরিষ্কার নয়। ফলে শিক্ষাজীবনের এক অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে দিন গুণছেন ১২ লাখ শিক্ষার্থী। তাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ভাটা পড়েছে। একই সাথে এসব শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের মধ্যেও বিরাজ করছে হতাশা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দেশের প্রায় ১২ লাখ শিক্ষার্থী। গত পয়লা এপ্রিল থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল এই পরীক্ষা কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে স্থগিত করা হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের এই পরীক্ষা। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় এখনো সেই পরীক্ষা শুরুর তারিখ ঘোষণা করতে পারছে না শিক্ষা বোর্ড। এই অবস্থায় দীর্ঘ মেয়াদের সেশনজটেরও আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। রোজার ঈদের পর স্থগিত হওয়া এই পরীক্ষা শুরু করার সম্ভাবনার কথা জানানো হলেও করোনা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ায় আবারো অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এই পরীক্ষা।

এ দিকে গত ৩১ মে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি বলেছিলেন, করোনার কারণে কতদিন ক্লাস বন্ধ থাকবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে যখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে, তখন ক্ষতি কিভাবে পোষানো যায় সে চেষ্টা আমাদের থাকবে। শিক্ষাবর্ষ বাড়ানো সম্ভব কি না এগুলোও আমাদের বিবেচনায় আছে। তিনি আরো বলেছিলেন, করোনার কারণে এখনি আমরা এইসএসসি পরীক্ষা নেয়ার কথা চিন্তা করছি না। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে দুই সপ্তাহের সময় দিয়ে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু করা হবে।

আরও পড়ুন >   শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতিতে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন, বিশেষ অতিথী এমপি বাবু

পরীক্ষার এই অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়ালেখা থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। অনেক অভিভাবকই জানান, তাদের সন্তান আগের মতো পড়ালেখায় মনোযোগী নন। পরীক্ষা শুরুর আগে যেভাবে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল তাতে এখন অনেকটাই ভাটা পড়েছে। পরীক্ষা অনশ্চিত হয়ে পড়ায় কোনো শিক্ষার্থী এখন পড়ার টেবিলেই বসতে চায় না। এতে অনেক মা-বাবা তার সন্তানের ভালো ফলাফল নিয়েও চিন্তিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষাবোর্ড ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ জিয়াউল হক গতকাল নয়া দিগন্তকে জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠান করা যাবে না। করোনা পরিস্থিতি পুরোপুরি ভালো না হলে এই পরীক্ষা আয়োজনে অনেকটাই স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে। কেননা এই পরীক্ষার সাথে শুধু ১২ লাখ শিক্ষার্থী জড়িত নয়। পরীক্ষা আয়োজনের সাথে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, পরীক্ষক, আনসার গার্ড, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি করোনা পরিস্থিতি ভালো হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে এই পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেবো। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ১৫ দিনের মধ্যে এই পরীক্ষা আয়োজন করার যাবতীয় প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিন দিন এ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। করোনার বিস্তাররোধে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে সভা-সমাবেশ ও গণজমায়েতের ওপর। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১ এপ্রিল থেকে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে সেই পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এ বছর সারা দেশের প্রায় ১২ লাখ শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।

আরও দেখুন

সম্পৃক্ত

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এছাড়াও পড়ুন
Close
Back to top button