আড়াইহাজার উপজেলাসারাদেশে

ঈদকে সামনে রেখে আড়াইহাজারে রমরমাট চুলাই মদ ব্যবসা

আড়াইহাজার প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চলছে দেশি চুলাই মদের রমরমা ব্যবসা। উপজেলার গোপালদী পৌরসভার উত্তর কলাগাছিয়া রত্নগরদী, রামচন্দ্রদী, জালাকান্দী এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা ঈদকে সামনে রেখে রমরমাট মাদক ব্যবসা করেছে। দেশের আইন-শৃঙ্গলা বাহিনী র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র‌্যাব), মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর, পুলিশ বাহিনী সহ বিভিন্ন সময়ে এই সকল এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের কে হাতেনাতে মাদক সহ আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করলেও কিছু দিন হাজতবাস করে কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বের হয়ে পুনঃরায় বাড়িতে চুলাই মদ তৈরি করে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। এসকল মাদক দ্রব্য গাজাঁ সহ বিভিন্ন মাদক বিক্রি করায় এলাকার কোমল মতি যুবক-যুবতিরা নেশাগ্রস্থ হয়ে ধ্বংস হচ্ছে।

মাদক ব্যবসায়ীদের ব্যাপারে রত্নগরদী গ্রামের সুভত চন্দ্র দাস, পাগলা সুশিল দাস জানান, রত্নগরদী এলাকার মাদক ব্যবসায়ী কুলিন্ড দাসের পুত্র রমেষ(৫০), গোলাপী রাণী (৪০), অণিকা রাণী (৪৫), রবি দাস(৫৫), অণু চন্দ্র দাস(৫০), কৃতিভাস চন্দ্র(৫০) সহ এই গ্রামের প্রায় ১৫-২০জন মাদক ব্যবসায়ী আছে।

মাদক ব্যবসায়ীদের ব্যাপারে রামচন্দ্রদী এলাকার রুহুল শিকদার ও কয়েকজন জনপ্রতিনিধিদের সাথে আলাপ করলে তারা জানায়, রাচন্দ্রদী এলাকায় বেশ কিছু চুলাই মদ ব্যবসায়ী আছে, এর মধ্যে মৃত ইব্রাহিমের স্ত্রী হাসিনা বেগম (৫৫), মহাশিন মিয়া (৩২), মালেকের পুত্র জামাল হোসেন (৪০), মিনারা বেগম (৪২), আব্দুল সাত্তার(৫০)-এর প্রতিদিনি নিজ বাড়ীতে চুলাই মদ তৈরি করে রমরমা মাদক ব্যবসা করে আসছে। রামচন্দ্রদী জালাকান্দী পাচাঁনী এলাকার বুদাই চন্দ্র দাস (৪৮), সন্তোষ দাস(৬০), ইয়াকুব আলী(৪৫), রূপ কুমার চন্দ্র দাস সহ বেশ কয়েকজনের বাড়িতে নিয়মিত চলছে দেশি চুলাই মদের রমরমা ব্যবসা।

স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, দিনের বেলায় বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন এসে বোতল ভরে মদ কিনে নিয়ে যায়। যেখানে দিনে রাতে সব সময় মদ বিক্রি করা হয়। একই সাথে আশে পাশের কয়েক গ্রামের মাদক সেবীদের নিরাপদ আস্তানাও বটে। দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে মদ তৈরী ও বিক্রি করে আসছেন রমেস চন্দ্র দাস, হাসিনা বেগম, জানাল হোসেন, সাত্তার, মিনারা বেগম সহ প্রায় সবার নিজ বাড়ীতে।

আরও পড়ুন >   আড়াইহাজারে বোমা উদ্ধার: প্রশিক্ষন দেয়া জঙ্গি সদস্য আটক

ঘটনা অনুসন্ধানে সন্ধ্যার পর হাসিনা বেগমের বাড়িতে যাওয়ার পথে বাড়ির পাশে প্রতিবেদকের সাথে দেখা হয় তার সাথে। হাসিনার সাথে কথা হয় ক্রেতা পরিচয়ে। তিনি জানান, আজকে মদ শেষ হয়ে গেছে আগামীকাল আইসেন। আমি আপনাদের জন্য মদ রাখবো। তার কথা মতো পরেরদিন আবার সন্ধ্যার পর হাসিনার বাড়ির ভিতরে গিয়ে দেখা যায় ৭-৮ জন লোক উঠানে বসে চুলাইচুলা মদ পান করছে। তাদের একজন রবি চন্দ্র দাস। কথা হয় রবি চন্দ্র দাসের সাথে তিনি বলেন, আমি এখানে নিয়মিত আসি। সকাল বিকাল এখানে এসে খেয়ে যাই। তার ভাষ্য ১০-১২ বছর ধরে এখানে মদ তৈরী করা এবং বিক্রি করা হয়। বিবরণ দেন বাংলা মদ তৈরী সর্ম্পকেও। এরই মধ্যে প্রতিবেদকের কাছে এক বোতল মদও বিক্রি করেন হাসিনা। এসময় তিনি বলেন, আরো লাগলে যেকোন সময়ই আইসেন। সমস্যা নাই নিতে পারবেন।

মদ পান করে মাদকসেবীরা জড়িয়ে পড়ছে নানা ধরনের অপরাধে। দীর্ঘদিন ধরে মদ কেনা বেচা ও মদ পানের আড্ডা বসলেও প্রশাসনের তেমন কোন তৎপরতা দেখা যায় নি। ফলে নষ্ট হচ্ছে যুব সমাজ। সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে মাদকের বিস্তার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় রমেষ চন্দ্র দাসের বাড়ির লোকজন মদের ব্যবসা করে আসছে। সহজলভ্য ও কম দামে পাওয়ায় আশে পাশের কয়েক গ্রামের লোকজন সহজেই মাদকে আসক্ত হচ্ছে। গ্রাম পুলিশ মাইনুদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মাঝে কয়েকদিন মদ কেনা বেচা বন্ধ থাকলেও এখন নিয়মিতই চলছে। সাংবাদিক পরিচয়ে মদ ব্যবসায়ী জামালের কাছে মদ বিক্রি ও প্রকাশ্যে মদের আড্ডা সর্ম্পকে জানতে চাইলে প্রথমে অস্বীকার করে। পরে প্রতিবেদকের কাছে মদ বিক্রি কথা বললে তিনি বলেন, তাহলে আমার কিছু বলার নেই। সন্তোষ চন্দ্র দাস বলেন, মদ বিক্রির ঘটনা মিথ্যা। আশেপাশের লোকজন ষড়যন্ত্র করছে।

আরও পড়ুন >   আড়াইহাজারে বাল্য বিবাহের চেষ্টায় মেয়ের বাবা-বরকে কারাদন্ড

গোপালদী পৌরসভার কাউন্সিলর আলী আজগর জানান, শুনেছি তারা নিজেরা মদ পান করে। বিক্রির বিষয়টি আমার জানা নেই।

এব্যাপারে আড়াইহাজার থানার অফিসার ইনচার্জ আহসান উল্লাহ বলেন, আমরা অনেক মদ ব্যবসায়ীকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছি, তারা যদি আবারো ব্যবসা শুরু করে, আমাদের পুলিশ ব্যবস্থা নিবে।

আরও দেখুন

সম্পৃক্ত

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button