মোঃ এফরান আলীঃ নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজারের যত্রতত্র শিশু-কিশোরদের মধ্যে মাদকসেবনের প্রবণতা বাড়ছে। এর কারণ হচ্ছে, শিশুমনের কৌতূহল, দারিদ্র্য এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। মাদকের অপব্যবহার একটি সামাজিক এবং স্বাস্থ্য সমস্যা। শিশুর শারীরিক, সামাজিক, মনস্তাত্ত্বিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের জন্য গুরুতর প্রভাব ফেলে। এটি পরিবার, সম্প্রদায়ের নেতা, শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মী, সরকার ও শিশুদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তথ্যানুযায়ী আড়াইহাজার পৌরসভা, গোপালদী পৌরসভা সহ আড়াইহাজারের সর্বত্র কমপক্ষে ১০০টি স্পট রয়েছে, যেখানে ৯ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশুরা মাদক সেবন করে। পথশিশুরা সাধারণত গাঁজা, ড্যান্ডি, চোলাই মদ, পলিথিনের মধ্যে গামবেল্ডিং দিয়ে ও পেট্রল শুঁকে নেশা করে। পথশিশুরা ক্ষুধার জ্বালা, একাকিত্বের কষ্ট বা সঙ্গদোষে নানা ধরনের মাদক নিচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম মাদক ড্যান্ডি। পথশিশুদের ভাষ্যমতে, ড্যান্ডি গ্রহণের অন্যতম কারণ হচ্ছে ক্ষুধা। ড্যান্ডিতে ঝিমুনি আসে, ঘুম আসে। তখন ক্ষুধার কথা মনে থাকে না। নেশার কারণে ছিন্নমূল শিশুদের মানসিক বিকৃত ঘটে। এ কারণে নেশার অর্থ জোগাড় করা ছাড়াও নৈতিক স্খলনের কারণে খুন, ছিনতাই, ধর্ষণ, চুরি, পকেটমারি, মাদক কেনাবেচাসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। তৃতীয়ত, বিশালসংখ্যক পথশিশুর মেধা ও প্রতিভাকে সমাজের কোনো কাজে লাগানো যাচ্ছে না। ছিন্নমূল শিশুদের পুনর্বাসন এবং সমাজের মূল স্রোতোধারায় ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারে সমাজ।
পথশিশুদের মাদকাসক্তি থেকে দূরে রাখতে আইনের প্রয়োগ খুব বেশি কাজে আসবে না। শিক্ষা, সহমর্মিতা, ক্ষুধা ও বাসস্থানের বন্দোবস্তের পাশাপাশি পারিবারিক আবহ পেলে ছিন্নমূল শিশুরা কখনো বিপথে যাবে না।