করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ঘরবন্দি প্রায় গোটা বিশ্ব। প্রতিটি মানুষ এখন একটাই আশা নিয়ে বসে আছে, কবে আসবে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের প্রতিষেধক। সেদিন হয়তো স্বাভাবিক হবে জীবন। কবে আসবে প্রতিষেধক? আদৌ কি এই ভাইরাস প্রতিরোধকারী ওষুধ আনা সম্ভব? মহামারীর মধ্যেই উঠে আসছে এমন সব প্রশ্ন।
অনেক গবেষকের আশঙ্কা, হয়তো কোনোদিনই আসবে না এই ভাইরাসের টিকা। আর যদি তাই হয় তাহলে এভাবেই ভাইরাস সঙ্গে নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে মানুষকে। সম্প্রতি এই আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন যুক্তরাজ্যের মেডিকেল অফিসার ক্রিস হুইতি।
সেখানকার পার্লামেন্টারি কমিটিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রথমত আমরা জানি না যে এই ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার পর কি দীর্ঘসময়ের জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায়? আজ সেটা যতক্ষণ না প্রমাণিত হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত টিকা নিয়েও কোনও নিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে না।
তিনি বলেন, টিকা তৈরি করা অসম্ভব বলছি না, টিকা তৈরি করা খুবই কঠিন।
তিনি আরও জানিয়েছেন, অনেক ক্ষেত্রে এমন দেখা গেছে যে একবার আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরও ভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে।
শুধু তিনি নন, লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের অধ্যাপক ডেভিড নবারোও একই কথা বলেছেন। তার আশঙ্কা হয়তো কোনওদিনই টিকা তৈরি করা সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, কিছু কিছু ভাইরাস এর ক্ষেত্রে টিকা তৈরি করা খুবই কঠিন। তাই হয়তো আমাদের ভাইরাসের আশঙ্কা নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে সারা জীবন। তবে তিনি মনে করেন এই ভাইরাস সম্পূর্ণভাবে রুখে দেওয়ার মতো টিকা না হলেও, অন্তত কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে এমন ওষুধ খুব তাড়াতাড়ি সামনে আসবে।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও জানিয়েছে, যারা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন, তারা যে আর আক্রান্ত হবেন না এমন কোনও কথা নেই। তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ায় তারা আর সংক্রামিত হচ্ছেন না এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
অনেক দেশের প্রশাসনই ভাবছে যারা একবার সুস্থ হয়ে যাচ্ছে, তাদের আর করোনা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এখনও তেমন প্রমাণ মেলেনি বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সুতরাং ভাইরাসের প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে যাচ্ছে বলে যে তথ্য সামনে আসছে তা সঠিক নয়।
এর আগে ডিজিজ সোস্যাইটি অব আমেরিকাও জানায় যে অ্যান্টিবডির বিষয়ে এখনই খুব বেশি কিছু জানা যায়নি। মুখপাত্র ড. মেরি হেডেন জানিয়েছিলেন, ‘আমাদের ধরে নিতে হবে যে সুস্থ হয়ে গেলেও ওই রোগী ফের সংক্রামিত হতে পারেন। কারণ, সংক্রমণের সম্ভাবনা কমে যাওয়ার প্রমাণ এখনও মেলেনি।