আড়াইহাজার প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ৬দলিল লেখকের সনদ সাময়িক বরখাস্ত করার কারনে আড়াইহাজার সাবরেজিস্ট্রার কাউসার খান সুমনের অপসারন দাবী করে বিক্ষোভ মিছিল করে বরখাস্তকৃত দলিল লেখক সহ তাদের অনুসারীরা। সাবরেজিস্ট্রারকে অফিসে গিয়ে হুমকী ও গালাগাল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে আড়াইহাজার সাবরেজিস্ট্রার অফিসের সামনে এ বিক্ষোভ মিছিল হয়।
আড়াইহাজার দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও সাময়িক বরখাস্তকৃত দলিল লেখক আমান উল্লাহ মোল্লা অভিযোগ করেন, আড়াইহাজার সাবরেজিস্ট্রার কাউসার খান সুমন ঠিকমতো অফিস করেনা। সে তার ইচ্ছামতো সময়ে অফিসে আসেন এবং বিকাল ৩টা বাজলে দলিল রেজিস্ট্রি আটকে দেন। পরে দলিল সম্পাদক করলে তাকে লেট ফি সহ ঘুষ প্রদান করতে হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন অজুহাতে প্রতিটি দলিল প্রতি তাকে মোটা অংকের টাকা না দিলে সে ঐ দলিল রেজিস্ট্রি করেনা। এতে করে সরকার বিপুল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং সাধারন মানুষ ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। দলিল লেখকরা তার এ অপকর্মের প্রতিবাদ করলে সাবরেজিস্ট্রার কাউসার খান সুমন দলিল লেখক সমিতির সভাপতি দলিল লেখক আমান উল্লাহ মোল্লা সনদ নং ৪৬, সাধারন সম্পাদক নুরুল আমিন সনদ নং ৬৫, জাকারিয়া জাকির সনদ নং ৬৯, কাজল ঢালী সনদ নং ১৩৮ ও আশরাফুল কবির মানিক সনদ নং ১৫৯ এর সনদ বালিতের নীল নকশা করে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করতে ভূমিকা রাখেন। তাই সাবরেজিস্ট্রার কাউসার খান সুমনের ঘুষ গ্রহন ও হয়রানী করার কারনে তার অপসারন চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।
আড়াইহাজার সাবরেজিস্ট্রার কাউসার খান সুমন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, বরখাস্তকারীরা সংঘবদ্ধ হয়ে ক্ষমতা খাটিয়ে কৌশলে ২৬/১২/১৯ তারিখে বিল এওয়াজ হেবা দলিলের সরকারী ফিস চালানের মাধ্যমে জমা না দিয়ে দলিল রেজিস্ট্রি করে নেন। যার দলিল নং ১৪৭৫২। পরে তা যাচাইয়ে ধরা পড়লে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি তদন্ত করে এ ছয় দলিল লেখকের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেন। তদন্ত প্রতিবেদনে এ ছয় দলিল লেখক দোষী প্রমানীত হওয়ায় নিবন্ধন অধিদপ্তর তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ প্রদান করলে ২৮ সেপ্টেম্বর জেলা রেজিস্ট্রার অভিযুক্ত ৬দলিল লেখকের সনদ সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন এবং তাদের সনদ কেন স্থায়ীভাবে বালিত করা হবে না তার জবাব চেয়ে ১৫ দিনের সময় দেন। ১০/০২/২০২০ তারিখে দলিল লেখক জাকারিয়া জাকির জমা না দেওয়া দলিলের সরকারী ফিস চালানের মাধ্যমে ব্যাংকে জমা দেন।
সাবরেজিস্ট্রার আরো বলেন, অভিযুক্তরা দলিলের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়াই তাকে দলিল রেজিস্ট্রি করার জন্য চাপ দেন। তাদের কথামতো অবৈধ দলিল না করাতেই আমার বিরুদ্ধে মিছিল ও অফিসে প্রবেশ করে গালাগাল ও হুমকী দেন অভিযুক্তরা। তিনি আরো বলেন,যে দলিলের জন্য তাদের সনদ সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে সে দলিল সম্পাদনের সময় তিনি এ অফিসে কর্মরত ছিলেন না। ঐ সময় সাবরেজিস্ট্রার ছিলেন সফিউল বারি।
দুপুরে সাবরেজিস্ট্রি অফিসে গেলে দেখা যায় সাবরেজিস্ট্রার সহ কর্মচারীরা অফিসের দরজায় তালা মেরে আতংকে ভিতরে তাদের প্রয়োজনীয় কাজ করছে।